নিবন্ধনবিহীন বিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট সুশীল চৌধুরী বলেন, ‘মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন অনুসারে প্রতিটি মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হবে। আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রি খাতায় বর ও কনের নাম, অভিভাবকের নাম, বয়স, ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয়।’
মুসলিম বিয়ে অনুযায়ী বিয়ের সময় দেনমোহর ধার্য করা হয়। বরপক্ষ এই দেনমোহরের টাকা নগদ বা অলঙ্কারের মাধ্যমে কনেকে প্রদান করে থাকেন। মুসলিম শরীয়া আইনেও দেনমোহরের ব্যাপারে অত্যন্ত কড়া তাগিদ দেয়া হয়েছে। দেনমোহরের টাকা বর ও কনের উভয় পক্ষের সম্মতিতে নির্ধারণ করা হয়। মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে একজন বিয়ে রেজিস্ট্রার দেনমোহরের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ করে থাকেন। ধার্যকৃত দেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকা ধার্য হবে। তবে রেজিস্ট্রেশন ফির পরিমাণ ১শ টাকার কম হবে না এবং চার হাজার টাকার উপরে হবে না। নিবন্ধন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের।
বিবাহ রেজিস্ট্রারের ১৮নং অনুচ্ছেদে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার (তালাক-ই-তৌফিজ) ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কিনা উল্লেখ করতে হয়। এ দিকটা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা হলে ইচ্ছে করলে কনে বরকে তালাক দিতে পারে।
বিয়ে নিবন্ধন ফলে স্বামী-স্ত্রী আইনগত বৈধতা লাভ করে সুশীল চৌধুরী বলেন, এর ফলে পরবর্তীতে বর অথবা কনে পক্ষ প্রয়োজন হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। এ ছাড়া সন্তানের পিতৃ বা মাতৃপরিচয় নিশ্চিত করে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন। আমাদের দেশে বিবাহিতা নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়। এই নির্যাতনের অন্যতম কারণ হলো যৌতুক। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন ধরনের যৌতুক প্রদান ও গ্রহণ আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনেক সময় যৌতুকের কারণে এ দেশের অনেক নারীকে জীবন দিতে হয়। তাছাড়াও যৌতুকের দাবি মিটাতে না পারায় অনেক নারী স্বামী গৃহ থেকে পরিত্যক্ত হয়। দাম্পত্য জীবনের যে কোন সমস্যার সমাধানে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন অপরিহার্য। বিয়ের কোন রেজিস্ট্রেশন না থাকলে কোন কারণে নারী তার স্বামীগৃহ থেকে বিতাড়িত হলে বা তালাকপ্রাপ্ত হলে তার প্রাপ্য দেনমোহরের টাকা আদায় করতে কাবিননামা খুব দরকার। কারণ এটা স্বামী-স্ত্রীর বৈধতা দেয়।